Header Ads

  • Breaking News

    জিএসএম নোটস রিজাইন ও জামানত নীতিমালা


    ১. চাকরির সময়সীমা

    • সর্বনিম্ন চাকরির মেয়াদ: যে সকল কর্মী জামানত প্রদান করেছে তাদের চাকরির মেয়াদ অবশ্যই ১ থেকে ১.৫ বছর হতে হবে। এই মেয়াদের পূর্বে রিজাইন দিলে জামানত পুরোপুরি ফেরত পাওয়ার যোগ্যতা নষ্ট হতে পারে।
    • অল্প সময়ের মধ্যে চাকরি ত্যাগ: যদি কোনো কর্মী ১.৫ বছরের পূর্বে রিজাইন করেন, তাহলে কোম্পানি প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য সেবার ব্যয় হিসেবে জামানতের উপর কর্তন করতে পারে।

    ২. রিজাইন প্রক্রিয়া ও নোটিস পিরিয়ড

    • চার মাসের নোটিস পিরিয়ড: রিজাইন লেটার জমা দেওয়ার পর কর্মীকে চার মাস কোম্পানির জন্য কাজ করতে হবে। এই সময়ের মধ্যে কোম্পানি তাকে যে কোনো সময় অব্যাহতি দিতে পারে, তবে জামানতকৃত অর্থের ফেরত চার মাস পর নির্ধারিত নিয়মে পাওয়া যাবে।
    • প্রাক-মেয়াদে রিজাইন: যদি কর্মী ১.৫ বছরের পূর্বে রিজাইন করে তবে চার মাসের নোটিস পিরিয়ড শেষ হবার পরেও জামানতের কোনো অংশ কাটা হবে যদি তা প্রশিক্ষণ ও বিভিন্ন ফ্রি হিসেবে উল্লেখিত হয়।

    ৩. জামানতের নিয়মাবলী

    • যে সকল কর্মীর জন্য জামানত প্রযোজ্য: শুধুমাত্র যারা কোম্পানির আর্থিক লেনদেন, গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যান বা বিশেষ ট্রেনিং প্রোগ্রামের সাথে যুক্ত, তাদের কাছ থেকে জামানত নেওয়া হয়।
    • ট্রেনিং খরচের জন্য কর্তন: কর্মীকে প্রশিক্ষণ দিতে যে খরচ হয় তা সামগ্রিক জামানত থেকে কেটে নেওয়া হবে যদি কর্মী দ্রুত চাকরি ত্যাগ করে।

    ৪. অনৈতিক কার্যকলাপ ও জামানত বাতিল

    • দুর্নীতির ক্ষেত্রে জামানত বাতিল: যদি কর্মী কোম্পানির অর্থনৈতিক বা অন্য কোনো ধরনের দুর্নীতি করে, তবে জামানত বাতিল হবে। তীব্র ধরণের দুর্নীতি করলে, চলমান বেতনও বাতিল হতে পারে এবং আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতে পারে।
    • দুর্নীতির উদাহরণ: ক্লায়েন্টের অর্থ নিজের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে নেওয়া, কোম্পানির গোপনীয়তা ফাঁস করা, নিয়ম ভঙ্গ করা ইত্যাদি।

    ৫. চুক্তি ও প্রশিক্ষণ সম্পর্কিত বিশেষ শর্তাবলী

    • চুক্তি ভিত্তিক কাজ: কিছু কর্মী স্টুডেন্ট হিসেবে চুক্তির মাধ্যমে কাজ শিখে। এই ক্ষেত্রে কোনো টাকা ফেরত পাওয়ার যোগ্যতা থাকে না এবং জামানতের নিয়মাবলী উপরে বর্ণিত নিয়ম অনুসারে প্রযোজ্য হবে।
    • বর্ধিত প্রশিক্ষণ: কোম্পানি প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় খরচ বহন করে, সেজন্য কাজ শেখানোর জন্য জামানত থেকে নির্দিষ্ট অংশ কর্তন করা হতে পারে যদি কর্মী নির্ধারিত মেয়াদের পূর্বে চাকরি ছাড়ে।

    কেন দেড় বছরের পূর্বে চাকরি ছাড়লে জামানত বাতিল হবে?

    জিএসএম নোটসে দেড় বছরের পূর্বে চাকরি ছেড়ে দিলে জামানত বাতিল হওয়ার কারণগুলোর মধ্যে রয়েছেঃ কর্মীর প্রাথমিক দক্ষতার অভাব, কোম্পানির বিনিয়োগ সুরক্ষা, এবং উৎপাদনশীলতা পুনরুদ্ধার করার প্রক্রিয়া। নিচে এই কারণগুলোর বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া হলো:

    ১. প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়ন খরচ

    জিএসএম নোটসে নতুন কর্মীদের কাজের ধরন ও দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করার জন্য ব্যাপক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। প্রথম পর্যায়ে কর্মী কাজের ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জন করতে সময় নেয়, এবং এসময় কোম্পানি তাকে তার নির্ধারিত চুক্তিকৃত বেতন দেয়, যদিও সে সম্পূর্ণ কার্যক্ষমতা প্রদর্শন করতে পারে না। এই প্রশিক্ষণের জন্য কোম্পানির আর্থিক বিনিয়োগের প্রয়োজন হয়, যা কোম্পানির জন্য একটি ব্যয়বহুল প্রক্রিয়া।

    ২. উৎপাদনশীলতার ঘাটতি ও বিনিয়োগ পুনরুদ্ধার

    একজন কর্মী পুরোপুরি উৎপাদনশীল হয়ে উঠতে সাধারণত ৬ মাস থেকে ১ বছর সময় নেয়। প্রথম অবস্থায় কর্মী যে কাজ করে, তাতে কোম্পানির প্রত্যাশিত উৎপাদনশীলতা অর্জিত হয় না। কিন্তু তবুও কোম্পানি তাকে নিয়মিত বেতন দেয়, কারণ এটি কর্মীকে পরিপূর্ণভাবে কাজ শেখাতে এবং অভ্যস্ত করতে একটি বিনিয়োগ। কর্মী যদি ১.৫ বছর পূর্ণ করার পূর্বেই চলে যায়, তবে কোম্পানি তার বিনিয়োগের যথাযথ ফলাফল পায় না, যা আর্থিক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

    ৩. নিবেদিত কর্মীর প্রয়োজনীয়তা

    একজন কর্মী যদি দীর্ঘমেয়াদে কোম্পানির সাথে থাকে, তাহলে তিনি কাজের গুণগত মান বাড়াতে সক্ষম হন এবং কোম্পানির সফলতা নিশ্চিত করেন। কিন্তু কর্মী যদি দ্রুত চলে যান, তবে কোম্পানিকে নতুন কর্মী নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ প্রক্রিয়ায় যেতে হয়, যা পুনরায় ব্যয়বহুল এবং সময়সাপেক্ষ। তাই, কর্মীদের ১.৫ বছরের মেয়াদ পূর্ণ করার মাধ্যমে কোম্পানি তার বিনিয়োগ সুরক্ষিত রাখতে চায় এবং দীর্ঘমেয়াদী অবদানের জন্য কর্মীদের উৎসাহিত করতে চায়।

    ৪. কোম্পানির সুরক্ষা ও দুর্নীতি প্রতিরোধ

    নতুন কর্মীদের অভিজ্ঞতা না থাকায়, তারা প্রশিক্ষণের সময় ত্রুটিপূর্ণ কাজ করতে পারে। তাছাড়া, কোনো কর্মী যদি কাজের গোপনীয়তা বা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ফাঁস করে, বা ক্লায়েন্টের অর্থ অন্য কাজে ব্যবহার করে, তবে কোম্পানির ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। দেড় বছরের কম সময় চাকরি করে কর্মী চলে গেলে, কোম্পানি সেই কর্মীর জন্য বিনিয়োগকৃত জামানত বাতিল করে, যাতে কর্মী দায়িত্ব পালনে নিবেদিত থাকে এবং কোম্পানির ক্ষতি না করে।

    ৫. কোম্পানির দোষে চাকরি ত্যাগ: জামানত ফেরত

    তবে যদি কর্মী অল্প সময়ে চাকরি ছাড়ার ক্ষেত্রে, কোম্পানির বড় ধরনের সুনির্দিষ্ট কোন অভিযোগ কিংবা সমস্যা দেখায়, যা কর্মীর বড় ধরনের সমস্যার কারণ, সেক্ষেত্রে কর্মীর জামানত আংশিক কিংবা সম্পূর্ণ (বিবেচনা সাপেক্ষে) ফেরত পাবে।

    সারসংক্ষেপ

    দেড় বছরের কম সময়ের মধ্যে চাকরি ত্যাগ করলে কোম্পানির বিভিন্ন দিক থেকে ক্ষতি হয়, যেমন প্রশিক্ষণ খরচ, উৎপাদনশীলতা পুনরুদ্ধার খরচ, এবং নতুন কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়ার খরচ। তাই, এই নীতিটি কোম্পানির বিনিয়োগ রক্ষা করতে এবং কর্মীদের দীর্ঘমেয়াদে থাকতে উৎসাহিত করতে সহায়ক। দেড় বছরের মেয়াদ পূর্ণ করার শর্তটি কোম্পানির জন্য একটি নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা হিসেবে কাজ করে, যা কোম্পানির বিনিয়োগ রক্ষায় সাহায্য করে এবং কর্মীদের দীর্ঘমেয়াদী অবদান রাখার জন্য উৎসাহিত করে।